পর্যটকের ঢল নেমেছে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায়। শারদীয় দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটিতে লাখো পর্যটকের পদচারণায় আনন্দ-উচ্ছ্বাসের নগরীতে পরিণত হয়েছে এই সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা। তবে অনেকেই হোটেলে রুম না পেয়ে লাগেজ বা ব্যাগ নিয়ে অবস্থান করছে বালিয়াড়িতে। অনেক ভ্রমণপিপাসু বলছেন, রুম না পেয়ে কুয়াকাটা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, বালিয়াড়িতে ভিড় করেছে পর্যটক। বালিয়াড়ির সামনে নীল জলরাশিতেও মানুষের ভিড়। সবাই মেতেছেন বাধভাঙ্গা আনন্দ-উল্লাসে।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব পূজা এবং সাপ্তাহিক টানা চারদিনের ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকের ঢল নেমেছে। হোটেলে রুম ভাড়া না পেয়ে ব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে অনেক সৈকতের বেঞ্চে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন। অনেকে সাগর তীরে। কেউ কেউ সড়কে পায়চারী করে সময় পার করছেন।
খুলনা থেকে আগত পর্যটক মোহাম্মদ হাসান বলেন, সকালে বাস থেকে নামার পর হোটেল খোঁজাখুঁজি করলেও রুম পাইনি। তবে একটি কটেজে রুম পেয়েছি সেটার ভাড়া অনেক বেশি চায়। রুমের অবস্থাও ভালো না।
রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক মারুফ হোসেন বলেন, সকালে কুয়াকাটা পৌঁছানোর পর অনেক হোটেলে গিয়েছি। কিন্তু কোথাও রুম পায়নি। শেষমেশ বালিয়াড়িতে লাগেজ ও ব্যাগ নিয়ে বসে আছি। যদি কোনো রুম পাই তাহলে আজকে থেকে যাব, না হয় রাতের গাড়িতে রাজশাহী ফিরে যাব।
ব্যবসায়ী ও পর্যটকের দেয়া তথ্য বলছে, ৪দিনের ছুটি মানেই কুয়াকাটায় পর্যটকের চাপ। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। ২ শতাধিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট এখন পর্যটকে ঠাঁসা। অনেকেই রুম না পেয়ে লাগেজ বা ব্যাগ নিয়ে অবস্থান করছেন সৈকতের বালিয়াড়িতে। তারা বলছেন, রুম না পেয়ে কুয়াকাটা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পর্যটকদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (কুটুম) এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, হঠাৎ করে এখানে অনেক পর্যটক বেড়েছে। বিষয়টি আনন্দের। তবে কিছু পর্যটক হোটেলের রুম না পেয়ে বাসা বাড়ি ও খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। আমরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কথা বলেছি। তারা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে।
আবাসিক হোটেল মিয়াদ ইন্টারন্যাশনাল’র ম্যানেজার ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, দুর্গাপূজার ছুটিতে কুয়াকাটায় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি পর্যটক এসেছেন। আমাদের কাছে যোগাযোগ করলে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে পাঠিয়েছি। অনেক পর্যটক বাসা বাড়িতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করে ফিরে গেছেন এমনটা শোনা যাচ্ছে।
কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী সাঈদ বলেন, কুয়াকাটায় ছোটো বড় মিলিয়ে প্রায় ২,শটির মতো আবাসিক হোটেল রয়েছে। দুর্গা উৎসবের টানা ছুটিতে রুম সংকট হওয়ায় কমিউনিটি টুরিজমের আওতায় বাসা বাড়িতে রাত্রি যাপন করেন পর্যটকরা আবাসন সংকট দূর করার জন্য বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পুলিশ পরিদর্শক আঃ খালেক বলেন, আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমাদের ৫টি টিম কাজ করছে। যদি কোনো পর্যটক রুম না পায়, আমাদের কাছে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি। তাদের সার্বিক নিরাপত্তায় আমরা সর্বদা তৎপর রয়েছি।