বাবুল রানা মধুপুর টাঙ্গাইল প্রতিনিধি।।
টাঙ্গাইলের মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের আনারস চত্বরে দীর্ঘদিন যাবত বসে আসছে মানুষ কেনা-বেচার হাট। বিশেষ করে বোরো আমন মৌসুমে ধানের চারা রোপণ ও ধানকাটার সময় মধুপুর আনারস চত্বরে দেখা যায় শ্রম বিক্রি মানুষের উপচে পড়া ভীড়। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে দলেদলে জড়ো হতে থাকে শ্রম বিক্রি করতে আসা মানুষ গুলো ।ধান কাটা মৌসুমে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে আসা দিনমজুরদের জমজমাট শ্রমিক হাট বসে মধুপুরের এই আনারস চত্বরে। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলে শ্রমিক বেচাকেনা। ভোরে না খেয়ে আসা শ্রমজীবি মানুষের জন্য সুস্বাদু হালুয়া রুটির ব্যবস্থা রেখেছেন এক ভ্রাম্যমান দোকানী। প্রতি রুটি হালুয়া সহ দাম ৬০ টাকা তবে তা কেটে ১০ টাকা করেও বিক্রি করেন তিনি। এখানে পণ্যের মতো একজন মানুষের সারাদিনের শ্রম কেনাবেচা হয় দর-কষাকষি করে। এই শ্রম বিক্রির হাটে শ্রমিকরা যেমন শ্রম বিক্রি করতে আসেন, ঠিক তেমন ক্রয় করতেও আসেন স্থানীয় গৃহস্থরা। বর্তমান সময়ে প্রতিটি শ্রমিক সারাদিনের জন্য কেনা-বেচা হচ্ছে ৫শো থেকে ৬শো টাকায়।ভোর ৫টা থেকে আসা শ্রম বিক্রি করা মানুষ গুলো অপেক্ষা করতে থাকেন কখন শ্রমক্রেতা আসবেন আর দরদাম করে শ্রম বিক্রি করতে পারবেন। শ্রমক্রেতা আসা মাত্রই হুমড়ি খেয়ে পড়েন সবাই। কে কার আগে দরদাম করে শ্রম বিক্রি করবেন শুরু হয় তার প্রতিযোগিতা। শ্রমক্রেতারা তাদের পছন্দমতো দরদাম করে দিনমজুরদের কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ শ্রম বিক্রির হাটে কম বয়সী দিনমজুরের চাহিদা বেশি কারণ, তারা বেশি শ্রম দিতে পারবেন।দিনমজুর সাদেক আলীর বাড়ি সিলেটের সুনামগঞ্জ এলাকায়। তিনি সহ একই এলাকার ৩জন শ্রম বিক্রি করেছেন কুড়ালিয়া বাগবাড়ি এলাকার অনেক পুরনো সফল গৃহস্থ আব্দুল হাকিমের বাড়িতে। তিনি জানান, পাঁচ সদস্যের পরিবার চলে তার শ্রম বিক্রির টাকায়। মাঝে মধ্যে কাজ না পেলে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়ে যায়।মধুপুর বানুরগাছি এলাকার মজিদ মিয়া জানান, সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে ছয়শো টাকা মজুরি পেয়ে অর্ধেক বাজারও করতে পারিনা। সবকিছুর দাম বাড়লেও আমাদের শ্রমের দাম বাড়েনি। সারাদিন কাজ করে যে মজুরি পাই তাতে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা।বোরো ধানকাটা প্রায় শেষের দিকে তাই শতশত শ্রম বিক্রি মানুষের মধ্যে অনেকেই কাজ না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।