দেবাশীষ দাশ, ( রাজা ) চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান,
চট্টগ্রামের প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার প্রতিনিধিগণের সাথে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১২.০০টায় মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়েছেন। মতবিনিময় সভায় লিখিত বক্তব্যে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস.এম মনিুজ্জামান বলেন, বন্দরের সকল সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ব্যবসার সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করার কার্যক্রম চলছে। গত তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৮৩০৫৮২, যাহা বিগত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৬৯৮৬ বেশি। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে প্রায় ১০.২২% প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরে ৪৫.৫ হাজার কন্টেইনারের স্থিতি ছিল। অর্থাৎ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মোট ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৮৫% ছিল। বিগত তিন মাসে পদ্ধতিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে তা ৩৪ হাজারে নামিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে জাহাজের ৬-৮ দিন হতে এক দিনে নেমে এসেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে আগমনের পর জাহাজসমূহ পাচ্ছে। আপনারা জানেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে যে পরিমাণ কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় তা মূলত বাংলাদেশেরই অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিফলন। চট্টগ্রাম বন্দরের এই ধারাবাহিক কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর পরিসংখ্যানের মাধ্যমে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির চিত্র পরিস্ফুটিত হয়। এতে বুঝা যায় বাংলাদেশের অর্থনীতি শত প্রতিকূলতার মাঝেও এর ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে লাইনার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রথমবারের গত ১১ নভেম্বর ২০২৪ এইচআর শিপিং লাইন এর অধীনে নামীয় জাহাজের মাধ্যমে ৩২৮ টি কন্টেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আগমন করে এবং ১২ নভেম্বর ২০২৪ কন্টেইনার খালাস করে চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করে। জাহাজটি মূলত দুবাইয়ের “জেবল আলী” বন্দর থেকে যাত্রা আরম্ভ করে মধ্যবর্তী করাচি বন্দর হয়ে চট্টগ্রাম ব ন্দরে আগমন করে। জাহাজটির সাধারণ রাউন্টিং হচ্ছে “জেবল আলী” দুবাই, করাচি পাকিস্তান, চট্টগ্রাম বাংলাদেশ বেলা ওয়ান, ইন্দোনিয়া পোর্ট কেলাং, মালয়েশিয়া মুন্দা, ইন্ডিয়া এবং পুনরায় “জেবল আলী” দুবাই। চট্টগ্রাম বন্দরের রাজস্ব আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আয় হয় জাহাজ সেবা এবং মালামাল হ্যান্ডলিং খাত হতে। চবক বর্তমানে ১৯৮৬ সালের প্রণীত ট্যারিফের আওতায় যাবতীয় সেবা প্রদানের বিপরীতে মাশুলদী আদায় করে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে চবক এর বিদ্যমান ট্যারিফ হালনাগাদ/পুন:নির্ধারণের জন্য কে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। উক্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণীত খসড়া চূড়ান্তকরণের জন্য নথি চবক এর বোর্ডের অনুমোদনক্রমে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের প্রক্রিয়াধীন আছে। আরো উল্লেখ্য, চবক এর সাম্প্রতিক সময়ের আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের গত ৪ মাসে ১৬৪৩.৮৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে যা গত অর্থবছরের একই সময়কালের রাজস্ব আয়ের তুলনায় ২১.৮৫% বেশি এবং একই সাথে রাজস্ব উদ্বৃত্ত ২৮.০১% বেশি। সেবার মান অক্ষুন্ন রেখে রাজস্ব আয় আরো বৃদ্ধি এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে রাজস্ব ব্যয় হ্রাস করার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এছাড়াও চবক এর বিনিয়োগের ঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে চবক হতে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহ বিনিয়োগ করা হচ্ছে। বন্দর চেয়ারম্যান আরো বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার দিক-নির্দেশনায়, মাননীয় নৌপরিবহন উপদেষ্টার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সমন্বয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের সমুদ্র পথে বহি:বাণিজ্য সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চট্টগ্রাম বন্দর বলিষ্ট ভূমিকা রাখতে বদ্ধপরিকর। মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) হাবিবুর রহমান, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর এম ফজলার রহমান, সদস্য (অর্থ) মোহাম্মদ শহীদুল আলম, সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদ।