• মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রামে জমি বিরোধে পিতা কর্তৃক কন্যা হত্যা।

রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি 
Update Time : সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজ কন্যাকে নির্মমভাবে হত্যা, আদালতে পিতাসহ ৩ জনের স্বীকারোক্তি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে পিতা নিজ কন্যাকে হত্যা করে। পুলিশের তাৎক্ষণিক তদন্ত ও তৎপরতায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনসহ ৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে উপস্থাপন করা হয়, যেখানে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।জানা যায়, গত ১০ মে ২০২৫, গভীর রাতে মোঃ জাহিদুল ইসলামের (৪৫) কন্যা জান্নাতি খাতুন (১৫), নবম শ্রেণির ছাত্রী, নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। পরদিন তার মরদেহ বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে একটি ভুট্টা খেতের পাশে পাওয়া যায়। খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করে।পরবর্তীতে জান্নাতির চাচা মোঃ খলিল হক (৫৫) বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি হাতে নিয়ে কুড়িগ্রাম থানার ওসি মোঃ হাবিবুল্লাহ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি চৌকস দল তদন্ত শুরু করে। মাত্র ৪ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করে।তদন্তে জানা যায়, ভিকটিমের পিতা মোঃ জাহিদুল ইসলামের সাথে প্রতিবেশী মজিবর গংদের মধ্যে ৩২ বিঘা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে জাহিদুল ইসলাম তার স্ত্রী মোছাঃ মোর্শেদা বেগম (৩৮) ও ভাইয়ের স্ত্রী মোছাঃ শাহিনুর বেগম (৪৫)-এর সহযোগিতায় নিজ কন্যা জান্নাতিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা রড ও দা দিয়ে জান্নাতির শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপায় এবং পরবর্তীতে মরদেহটি ভুট্টা খেতে ফেলে রেখে খরের গাদায় আগুন লাগিয়ে আলামত ধ্বংসের চেষ্টা করে।পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিমের পিতা জাহিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে এবং তার দেখানো মতে বাড়ির পাশের বাঁশঝাড় থেকে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা হত্যায় ব্যবহৃত ২০ মি.মি. ব্যাসের ৩৩ ইঞ্চি লম্বা একটি লোহার রড এবং একটি দা উদ্ধার করা হয়।কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও ডিবির অফিসার ইনচার্জ বজলার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “আমাদের যৌথ টিমের দ্রুত ও পেশাদার তদন্তের ফলে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মূল হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।”গ্রেফতারকৃত ৩ আসামি—মোঃ জাহিদুল ইসলাম, মোছাঃ মোর্শেদা বেগম ও মোছাঃ শাহিনুর বেগম—অদ্য ১২ মে ২০২৫ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। মামলাটির তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


এ বিভাগের আরও সংবাদ