মহিউদ্দিন মাহি- বোয়ালমারী, ফরিদপুর প্রতিনিধি ।
ছাত্র-জনতার খুনিদের বিচার ও পূর্ণ-সংস্কারের পূর্বে নির্বাচন প্রহসনের নামান্তর। যদি শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে কোন ফ্যাসিস্ট সরকার মাথাচাড়া দিয়ে উঠে তাহলে ছাত্রসমাজ, যুবসমাজ, জুলাইয়ের মতো আবার গর্জে উঠবে। আওয়ামী লীগকে এই বাংলার জমিনে নিষিদ্ধ করে ছাড়বো। আওয়ামী লীগ এই বাংলার জমিনে রাজনীতি করার অধিকার রাখেনা। কথাগুলো বলেছেন, এনসিপির ফরিদপুর-১ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী হাসিবুর রহমান অপু।গত রবিবার (৩০ মার্চ) ২৯ রমজান সন্ধ্যায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা অডিটোরিয়াম হল রুমে জাতীয় নাগরিক পার্টির বোয়ালমারী উপজেলা শাখার আয়োজনে ফিলিস্তিন বাসীদের জন্য দোয়া ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শহীদদের স্মরণে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন, সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক মো. হাসিবুল ইসলাম। মো. শাহাদাত অনিক, মেহেদী হাসান তমাল ও সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির ফরিদপুর-১ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাসিবুর রহমান অপুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পৌর আমীর সৈয়দ নিয়ামুল হাসান, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য তৌহীদ আহমেদ আশিক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফারহান হাসান বর্ণ, জাতীয় নাগরিক পার্টির ফরিদপুর জেলা শাখার সংগঠক ডা. বায়েজিদ হোসেন শাহেদ, গণ অধিকার পরিষদের বোয়ালমারী উপজেলা শাখার সদস্য সচিব মতিউর রহমান মুন্না প্রমুখ।
সংযুক্ত করা হলো তারেক রহমানের বাণী। “ত্যাগ-তাকওয়া আর সংযমের শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর ব্যক্তি, পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় জীবনকে সুন্দর ও পরিশুদ্ধ করার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর বিশ্বজনীন ঐক্য, সংহতি, সহমর্মিতা এবং অনাবিল আনন্দের বার্তা নিয়ে এলো পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর প্রতি জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও মোবারকবাদ। ঈদ মুবারক।ব্যক্তি জীবনকে পরিশুদ্ধ ও সংযমী করে গড়ার লক্ষ্যে মোমিন মুসলমানেরা মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর হৃদয় আনন্দে উপচে পড়া ঈদুল ফিতর সমাগত হয়।বীর জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক পর গুম, খুন, অপহরণের ভয়হীন-স্বাধীন সার্বভৌম এক গণতান্ত্রিক পরিবেশে দেশের আপামর জনগণ এ বছর পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন করছে। এবারের ঈদ আনন্দে তাই যোগ হয়েছে উচ্ছাস-উৎসাহ উদ্দীপনার এক নতুন মাত্রা।তবে মানুষের মনে পবিত্র আনন্দ-উচ্ছাসের এমন এক বাধাহীন ঊর্মিমুখর সময়েও অনেক মায়েদের মনে আনন্দ নেই। অনেক পরিবারে নেই উৎসবের আমেজ। কারণ ফ্যাসিবাদের দীর্ঘ দেড় দশকের গুম, খুন, অপহরণ, জুলুম নির্যাতনে সন্তান স্বজনহারা লাখো পরিবারে নেমে এসেছিলো জাহেলিয়াতের অন্ধকার। শুধুমাত্র জুলাই-আগষ্টেই পলাতক স্বৈরাচারের পতনের শেষ দিনগুলোতে প্রাণ হারিয়েছেন নানা শ্রেণী পেশার হাজারো মানুষ। ছাত্র-যুবক-কৃষক-শ্রমিক-রাজনৈতিক কর্মী কিংবা নিরীহ পথচারী এমনকি নারী শিশু বৃদ্ধ পর্যন্ত ফ্যাসিস্টের বুলেট থেকে রক্ষা পায়নি। আহত হয়েছেন ২০ সহস্রাধিক মানুষ।ফ্যাসিবাদ পতন আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারগুলোতে আজ তাই ঈদ উৎসবের বাঁধভাঙা উচ্ছাস নেই। ঈদের দিনেও হয়তো সন্তানহারা কোনো মায়ের চোখে অশ্রু। এই আনন্দঘন সময়েও স্বজনদের হৃদয়ে আপনজন হারানোর নিঃশব্দ কান্না। মাফিয়া চক্রের নির্মমতায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত প্রিয় মানুষটির কাছে বসেই অনেককে ঈদ আনন্দের এই দিনটি কাটাতে হচ্ছে আশা নিরাশা আর হতাশায়।ঈদুল ফিতর নির্মল আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মর্মবাণী মানবজাতির কাছে পৌছে যায় তা হচ্ছে ‘সকলের তরে সকলে আমরা’। এই মর্মবাণী মানসিক কদর্য, অন্যায়, অবিচার ও নিষ্ঠুর সামাজিক অসাম্যকে অতিক্রম করে এক নিবিড় ভ্রাতৃত্ববোধের প্রেরণা জাগায়। আর এই প্রেরণায় উদ্দীপ্ত হয়ে সমাজের অপেক্ষাকৃত দরিদ্র, অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষের প্রতি সাহায্য ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া মুসলমান হিসাবে আমাদের কর্তব্য।দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালাতে গিয়ে যারা মানুষের ঈদ উৎসবের আনন্দকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যারা অস্ত্রের জোরে মায়েদের বুক থেকে তাদের প্রিয় সন্তানদের কেড়ে নিয়েছে, যারা দেশের অসংখ্য অগণিত সন্তানকে পিতৃহারা-মাতৃহারা করেছে, এই বাংলাদেশে তাদের বিচার হতেই হবে। যে কোনো মূল্যে পলাতক স্বৈরাচার আর তাদের দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করার মাধ্যমে দেশে আইন ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করে সন্তানহারা মায়েদের মনে স্বজন হারা শোকসন্তপ্ত পরিবারে একটু হলেও সান্ত্বনার বার্তা দেয়া হবে। এবারের ঈদে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভিঘাত সত্বেও ঈদ আমাদের জাতীয় জীবনের সংস্কৃতির দ্যোতক, আবহমানকাল থেকে শুভেচ্ছা ও আনন্দের আদান প্রদান।ঈদুল ফিতরের দিনে আমি আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য।আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।