• মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন

ঝালকাঠির আকলিমা-মোয়াজ্জেম কলেজের পোর্টালে আওয়ামী সরকারের প্রচারণা 

মোঃ সিয়াম খান ঝালকাঠি।।
Update Time : মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

মোঃ সিয়াম খান ঝালকাঠি।

ঝালকাঠির আকলিমা-মোয়াজ্জেম হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ আওয়ামীলীগ নেত্রী হওয়ায় এখনও কলেজের ওয়েব পোর্টালে আওয়ামীলীগ সরকারের প্রচারণা রয়েছে। ওই পোর্টালে বঙ্গবন্ধুর ছবি, আমির হোসেন আমু’র ছবি ও বাণি এবং কলেজ অধ্যক্ষ যুথিকা মন্ডলের বাণিতে “শেখ হাসিনার ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে এবং আধুনিক শিক্ষাবান্ধব ডিজিটাল সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আমরা এগিয়ে যাবো।” যা এখনওhttps://www.amhc.edu.bd/message_from_head) স্পষ্ট দৃশ্যমান। কলেজের এ বিষয়সহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে জেলা জুড়ে তুমূল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেবল শিক্ষার আলো ছড়ানোর স্থান, দলীয় প্রচারণার মঞ্চ নয়। আকলিমা মোয়াজ্জেম হোসেন কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রচারণা বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের জন্য সত্যিকার অর্থে একটি নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী ও জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমু’র পৃষ্ঠপোষকতায় তারই মা-বাবার নামে ২০১২সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আকলিমা-মোয়াজ্জেম হোসেন ডিগ্রি কলেজ। কলেজের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় দলীয় কোঠায়। মেধার মূল্যায়ন না করে আওয়ামীলীগের দলীয় ক্যাডাররা এখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ পান। মেধাবী কিন্তু দলীয় লোক না হলেও জেলার শীর্ষ এবং প্রভাবশালী কোন নেতার আত্মীয় হিসেবে নিয়োগ নিতে হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়েছে দলীয় প্রত্যয়নপত্র। আওয়ামীলীগের সেই প্রভাবের ধারাবাহিকতায় কলেজের সবকিছুই যেন আওয়ামীলীগের, এমনভাবে সাজানো হয়েছে। কলেজের পোর্টালে অধ্যক্ষের বাণিতে যুথিকা মন্ডলের সেই আওয়ামীলীগের দালাল হিসেবে এখনও রয়েছে। “শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার ভিশন ২০৪১বাস্তবায়নে এবং আধুনিক শিক্ষাবান্ধব ডিজিটাল সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আমরা এগিয়ে যাবো।” কলেজে রাজনৈতিক প্রচারণার অভিযোগ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কলেজটির ওয়েবসাইটে এখনো শেখ হাসিনা ও তার পরিবারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বক্তব্য এবং ছবি প্রকাশ্যে রয়েছে, যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলছে। স্থানীয় অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম অস্বস্তি ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় অভিভাবকরা অভিযোগ করে জানান, “আমাদের সন্তানদের শেখ হাসিনার প্রচারণায় ব্যবহৃত হতে হচ্ছে। শিক্ষার পরিবর্তে এখানে চলছে রাজনৈতিক মতাদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা।” শিক্ষকদের একাংশের মতে, “একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে দলীয় প্রচারণার মঞ্চে রূপান্তর করা আদর্শগত অবক্ষয় এবং এটি শিক্ষার পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।” প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত এই কলেজে রাজনৈতিক আদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের একজন বলেন, “আমাদের সন্তানদের রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানো হচ্ছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর যেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি জোরালো হচ্ছে। সেখানে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন রাজনৈতিক প্রচারণা পুরো ঝালকাঠি জেলায় অশান্তির বীজ বপন করতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা। স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও অভিভাবকরা মনে করছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখা অত্যান্ত জরুরি। অচিরেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে শান্তিপ্রিয় ঝালকাঠি জেলায় অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হবে।”কলেজের অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, আওয়ামীলী আদর্শ চাপিয়ে দেয়া, ওয়েবপোর্টালে শেখ হাসিনার ভিষন স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকার বিষয়ে সাংবাদিকরা অধ্যক্ষ যুথিকা মন্ডলের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি তার অফিস সহকারী সোহেল দিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। ঔদ্ধত্যপুর্ণ আচরণ করে বিভ্রান্তিকর কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আমার লোক নাই ওটা ডিলিট করার তাই ডিলিট করতে পারিনি।


এ বিভাগের আরও সংবাদ