নিরঞ্জন মিত্র (নিরু) (ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুর শহরের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কুমারী পুজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
(১১ অক্টোবর) শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে শহরের চরকমলাপুর রামকৃ্ষ্ণ মিশন আশ্রমে এ পুজা অনুষ্ঠিত হয়।
সনাতনী হিন্দুগণের শাস্ত্র মতে যুগ যুগ ধরে দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীর দিনে কুমারী পূজা হয়ে আসছে। কুমারী মেয়েদের দেবিজ্ঞানে এবং মা জ্ঞানে এই পূজা করে থাকে।
এবছর কুমারী পূজাতে ফরিদপুর রামকৃষ্ণ মিশনে মালিনী রূপে যে কুমারী দুর্গা মা হিসেবে পূজার আয়োজন করে পূজিত হলো। তার নাম অনুরূপা চক্রবর্তী। শিশুটি শহরের আলীপুর নিবাসী অমিত চক্রবর্তী ও অন্যন্যা ভাদুড়ী দম্পতির মেয়ে। অনুরূপার বয়স সাত বছর। সে কেজি শ্রেণির ছাত্রী।
এ ব্যাপারে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের মহারাজ স্বামী সুরবানন্দ জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও মহাঅষ্টমীতে ফরিদপুরে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল থেকে পূজায় অসংখ্য ভক্তবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন, বিশেষত দুর্গাপূজার অংশ হিসেবে কুমারী পূজা হয়। শাস্ত্রমতে কুমারী পূজার উদ্ভব বানাসুর বা কোলাসুরকে বধ করার মধ্য দিয়ে।
ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি সঞ্জিব দাস বলেন, কুমারী পূজা হলো তন্ত্রশাস্ত্র মতে অনধিক ১৬ বছরের অরজঃস্বলা কুমারী মেয়ের পূজা। আরেকটু স্পষ্ট করে বলা যায়, হিন্দু তন্ত্রশাস্ত্র মতে ১৬ বছরের কম বয়সী কন্যাকে দুর্গাদেবীর প্রতীকে পূজা করার নাম হলো কুমারী পূজা। আর কুমারী পূজায় প্রতিবছর কুমারীকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়।
তিনি আরো বলেন, এবছর ফরিদপুর জেলার নয়টি উপজেলায় মোট ৭২৭ টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন মণ্ডপে উপবাস থেকে ভক্তরা দুর্গা মায়ের চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছেন। নানা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জেলায় দুর্গাপূজা উৎসব চলছে।
পূজার পুরোহিত বিশ্বজিৎ কুমার চক্রবর্তী নিলয় বলেন, শাস্ত্রমতে এই বয়সে কুমারী পূজিতা হলে শুভশক্তির বিকাশ ও অশুভ শক্তির বিন্যাস ঘটে। এতে সমাজে অশান্তি দূর হয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় থাকে। শারদীয় দুর্গোৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং জাঁকজমকপূর্ণ আজকের দিন। সকালে কুমারী পূজার মধ্য দিয়ে দিনটি শুরু হয় এবং সন্ধ্যায় দেবীর সন্ধ্যাপূজা। কুমারী বালিকার মধ্যে শুদ্ধ নারীর রূপচিন্তা করে তাকে দেবীজ্ঞানে পূজাকরে ভক্তরা।
কুমারী পূজায় দর্শনার্থী হিসেবে আসা ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোদারেস আলী ইছা বলেন, ফরিদপুর সব সময় একটি শান্তিপ্রিয় জেলা শহর। এখানে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে নিজ নিজ ধর্মীয় কাজ সম্পন্ন করে। আমরা চাই না
কেউ অন্যের ধর্ম পালনে সমস্যা সৃষ্টি করুক। আমরা সবাই মিলেমিশে চলতে চাই।